টাটা-এর এক লাখি গাড়ি ন্যানোকেও হার মানাতে চলেছে শান্তিপুরের এক মণ্ডপসজ্জা শিল্পীর পকেট ফ্রেন্ডলি সৃষ্টি। শান্তিপুরের বৈষ্ণবপাড়ার সঞ্জয় প্রামাণিক ভাঙাচোরা জিনিস দিয়ে যে গাড়ি তৈরি করেছেন সেই গাড়ির দাম মাত্র দশ হাজার টাকা।
সঞ্জয়বাবু ইঞ্জিনিয়ার নন, পেশায় মণ্ডপ শ্রমিক। তবে লকডাউনের সময় ঘরে বসে বিভিন্ন বাতিল জিনিস দিয়ে অভাবের সংসারে ছোট ভাইপোর বায়না সামলাতে বানিয়ে ফেলেছিলেন আস্ত একটি গাড়ি। নাম দিয়েছিলেন ‘আমি একা’। তবে এবার নতুন গাড়িতে চালকের পাশে আর একটি আসন বেড়েছে। হেডলাইট থেকে ইন্ডিকেটর, হর্ন থেকে ব্যাক গিয়ার, মিউজিক সিস্টেমে গান শোনার ব্যবস্থা, জলের বোতল, লাগেজ রাখার ব্যবস্থা, সবকিছু সুবিধা রয়েছে গাড়িতে।
তবে গাড়ির মোটর ও ব্যাটারির খরচ আলাদা। তা যার যেমন সাধ্য তেমন দামে কিনে এ গাড়িকে সাধারণ গাড়ি থেকে স্পোর্টস কারও বানানো সম্ভব। সোমবার ট্রায়ালে বের হলে তার গাড়ির দিকে তাকাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাস লরি থামিয়ে একটু চালিয়ে পর্যন্ত দেখেছেন অন্য গাড়ির চালকরা। পথচারীরা তুলেছেন সেলফি। সঞ্জয়বাবু বলেন, এবারের গাড়িটি মূলত এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কলেজ পড়ুয়ার অর্ডার অনুযায়ী বানানো হয়েছে। তাঁরই হাতে তুলে দেওয়ার আগে ট্রায়াল দিয়ে দেখে নিলাম। এই গাড়িতে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ প্রত্যেকেই নিরাপদেই যাতায়াত করতে পারেন।”
তাঁর আরেকটি নেশা আছে, তিনি বিভিন্ন গাছের শেকড় থেকে ভাস্কর্য তৈরি করেন। আফফান ঝড় হোক বা সাধারণ কালবৈশাখী, উল্টে যাওয়া গাছের শেকড়ের অংশ দিয়ে ঘর সাজানো সৌখিন দ্রব্য, অসংখ্য অসাধারণ ভাস্কর্য সাজিয়ে রেখেছেন তার ভাঙ্গা ঘরে। চোখের সামনে ফেলে দেবার জিনিস কুড়িয়ে রাখেন তিনি, আর তা দিয়ে অকল্পনীয় নানান জিনিস সৃষ্টি করেন। এমন উদ্ভাবনী সৃষ্টির কারণে শান্তিপুর পৌরসভার সিএসসি মেম্বার শুভজিৎ দে সংবর্ধনাও দেন তাঁকে।
ভালোবাসার পক্ষে থাকুন, নিবিড়-এর সঙ্গে থাকুন
