‘কৃত্তিবাস’ থেকে শুরু করে ‘চিত্রভাষ’। ‘কৌরব’ থেকে শুরু করে ‘শতভিষা’। বইয়ের তাকে থরে থরে সাজানো জানা-অজানা অজস্র ছোটো পত্রিকা। কথা হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের সম্পর্কে। কলেজস্ট্রিটের টেমার লেনের এই বাড়ি ছোট পত্রিকার পীঠস্থানই বটে।
১৯৭৮ সালে একক উদ্যোগে এই লাইব্রেরির পথচলা শুরু লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনকর্মী ও লেখক সন্দীপ দত্তের হাত ধরে। লক্ষ্য ছিল বাংলা সাহিত্যের চলমান ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা। অসুস্থতার মধ্যেও একনিষ্ঠভাবে সেই কাজটা তিনি চালিয়ে গেছেন বিগত চার দশক ধরে।
শুধু কি লিটল ম্যাগাজিনের সংরক্ষণই নয়। লেখকদেরও দাঁড়াবার একটা জায়গাও করে দিয়েছিলেন তিনি তাঁর মস্তিস্কপ্রসুত লেখক ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। তরুণ লেখকদের সাহিত্যের মূলস্রোতে নিয়ে আসতেই এহেন উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

কলকাতা বইমেলা তো বটেই, পাশাপাশি শহরতলি ও প্রান্তিক বিভিন্ন আঞ্চলিক লিটল ম্যাগাজিন মেলাগুলিও অনালোকিত থেকে যেত তাঁকে ছাড়া। কিছুদিন আগে পর্যন্ত নিরলসভাবে তিনি সংগ্রহ করে গিয়েছেন সাম্প্রতিক লিটল ম্যাগাজিনের সংখ্যাগুলি। অপত্যস্নেহে তাদের জায়গা করে দিয়েছেন লাইব্রেরিতে।
নানা শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও এমন সাহিত্যসাধনা হয়তো তাঁর পক্ষেই সম্ভব ছিল। পায়ের সমস্যা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি রোজ টেমার লেনের বইঘরে আসা। বিগত কয়েক সপ্তাহ অসুস্থ থাকার পর আজ অমৃতলোকের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিলেন লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সহযোদ্ধা, সংরক্ষক ও কবি সন্দীপ দত্ত। তাঁর সন্তানসম পত্রপত্রিকাগুলির ভবিষ্যৎ কী হবে সে বিষয়ে এখন এগিয়ে আসা উচিত সকলেরই।
ভালোবাসার পক্ষে থাকুন, নিবিড়-এর সঙ্গে থাকুন
