ভোজনরসিক বাঙালির মিষ্টিপ্রেম আজকের নয়। শেষপাতে হোক বা যে কোনো অজুহাতে! মিষ্টি জড়িয়ে আছে বাঙালির জীবনযাত্রায়। তেমনই এক মিষ্টি কাজু বরফি। এর আসল জন্মস্থান কিন্তু কাঁথি। চারকোণা আকৃতিতে সে ঢেকে দেয় অতিথি আপ্যায়নের সমস্ত ত্রুটি।
সেকালে দেবতার পুজোয় ছানা ব্যবহার করা যেত না। মিষ্টান্ন ভোগে তাই একমাত্র সহায় ছিল সন্দেশই। রসনাপ্রেমী বাঙালি তারপর অনেক গবেষণা করেছে সন্দেশ নিয়ে। ফল হিসেবে যা পেয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল কাজু বরফি। এখন প্রায় সব দোকানেই তা মেলে। কিন্তু রসনার মনে রেখে দেওয়া স্বাদ!
আরো পড়ুন : বিরিয়ানির পাত্রে কেন লাল কাপড় থাকে?
প্রায় ৮৫ বছর আগের কথা। কালাচাঁদ প্রধান ওরফে কালু ময়রা এই মিষ্টি বানিয়ে ফেলেন। পৃথিবীর কিছু অন্যতম আবিষ্কারের মতো সম্পূর্ণ অযাচিতভাবেই। কালু ময়রা কাজুর গুঁড়ো দিয়ে বরফি বানাতে চাননি। অন্য মিষ্টি গড়তে গিয়ে ভুল করে গড়ে ফেলেছিলেন সন্দেশটি। পরদিন বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া তাঁর দোকানে ভিড় জমেছিল খুব।
অনেকে এসেছিলেন মিষ্টি কিনতে। তারপর দেশের গণ্ডী ছাড়িয়ে বরফির সটান বিদেশযাত্রা। এখনও রপ্তানি হয় টোকিও, লাস ভেগাস, নিউ ইয়র্ক, মালয়েশিয়া এমনকি প্যারিসে। তবে বাসস্ট্যান্ডের দোকানটি বন্ধ হয়ে যায় কালু ময়রার মৃত্যুর পরেই। এখন কাছাকাছি কয়েকটি দোকানেই মেলে স্পেশাল কাজু বরফি।
আরো পড়ুন : ব্যান্ডেল চিজ – বাংলার জন্য পর্তুগিজ উপহার
তবে চাইলে বাড়িতেও বানাতে পারেন এই কাজু বরফি। ব্লেন্ডারে কাজু দিয়ে ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। গুঁড়ো কাজুর সঙ্গে গুঁড়ো দুধ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। ভালো করে ফুটিয়ে, রস বানিয়ে এবং জমে গেলে ধারালো ছুরির সাহায্যে বরফির আকারে কেটে নিতে হবে। কাটার পর আবার এক ঘণ্টা দিয়ে তার পর তা পরিবেশন করা যাবে।
ভালোবাসার পক্ষে থাকুন, নিবিড়-এর সঙ্গে থাকুন
Image by stockimagefactorycom on Freepik
