সংগীতের ইতিহাসে ফ্রেডি মার্কারি এক অবিস্মরণীয় নাম৷ একাধারে চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, বাদক ও গায়ক৷ নানা ধরনের রক গান, হেভি মেটাল, গসপেল, ডিস্কো-সহ বহু ধারার গান রচনা করেছেন তিনি৷ ফ্রেডির লেখা ও গাওয়া ‘বোহেমিয়ান র্যাপসোডি’ সর্বকালের সেরা গানের তালিকায় ইতোমধ্যেই স্থান পেয়েছে। তবে আপনারা কি জানেন, বিশ শতকের অন্যতম এই কালচারাল আইকনের শৈশব কিন্তু কেটেছিল ভারতে?
ফ্রেডির জন্ম ১৯৪৬ সালের পাঁচ সেপ্টেম্বর, পূর্ব আফ্রিকার জানজিবারে, ভারতীয় এক পার্সি পরিবারে৷ বাবা-মা নাম রাখেন ফারুখ বুলজারা৷ ৮ বছর বয়সে বাবার পেশাগত কাজের সূত্রে তাঁরা চলে আসেন ভারতে, মুম্বাইয়ের কিছু দূরে পাঞ্চগানি শহরে৷ ইংরেজি বোর্ডিং স্কুলে লেখাপড়া শুরু হয় ছোট্ট ফারুখের৷ ব্রিটিশ ঘরানার এই স্কুলেই সংগীতের হাতেখড়ি তাঁর।
আরো পড়ুন : ‘গাট্টা’ খেতে মিষ্টি, চিবোতে কড়া
খেলাধুলাতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। দশ বছর বয়সেই স্কুলের টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন হয়ে যান ফারুখ। অবসর সময়ে বাড়িতে সংগ্রহে থাকা ভারতীয় ও পশ্চিমা গানের রেকর্ড শুনতেন এবং গানগুলো গাওয়ার চেষ্টা করতেন। গানের প্রতি ফারুখের এই আগ্রহ দেখে প্রধান শিক্ষক স্কুলের পিয়ানো ক্লাসে ফারুখকে ভর্তি করবার আশা প্রকাশ করে তার বাড়িতে চিঠি পাঠান। এভাবেই শুরু হয় পিয়ানো শেখা।
১২ বছর বয়সে ফারুখ ও তার আরো চার স্কুলবন্ধু ডেরিক ব্র্যাঞ্চ, ব্রুস মারে, ফারাং ইরানি এবং ভিক্টরি রানা মোট ৫ জন মিলে গঠন করেন ‘দ্য হেকটিস্ক’ ব্যান্ড। এর মাধ্যমেই ওয়েস্টার্ন রক মিউজিকের আনুষ্ঠানিক চর্চা শুরু করেন ফারুখ। নিজের নামের প্রথম অংশ পরিবর্তন করে নতুন নাম নেন ‘ফ্রেডি’। ১৯৬২ সালে স্কুলের পাট চুকিয়ে জানজিবারে পরিবারের কাছে ফিরে যান ফ্রেডি। এর মধ্যে গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরো পূর্ণতা লাভ করেছে।
আরো পড়ুন : অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো কমিউনিটি কিচেন
এর আরও কিছু পরে ১৯৭০ সালে ফ্রেডি গঠন করেন চার সদস্যের দল ‘কুইন’৷ এই সময় তাঁর বুলজারা নাম ছেড়ে মার্কারি নাম গ্রহণ করেন৷ একের পর এক সাফল্য আসতে থাকে৷ সত্তর ও আশির দশকে বিশ্ব সংগীতাঙ্গনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল কুইন৷ এ সময় কুইন ছাড়াও একক সংগীত শিল্পী হিসাবেও বহু খ্যাতিমান সংগীত শিল্পীর সাথে কনসার্ট পরিবেশন করেন ফ্রেডি৷ ১৯৯১ সালে মাত্র পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে লন্ডনে, এই অসামান্য সঙ্গীত প্রতিভা মৃত্যুবরণ করেন৷ মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত গান গেয়েছেন ফ্রেডি মার্কারি৷
ভালোবাসার পক্ষে থাকুন, নিবিড়-এর সঙ্গে থাকুন
Image by David Mark from Pixabay
