রবিবারের ব্রিগেড দেখে প্রমাণ হল যে, ব্রিগেডের ভিড়ের সাথে ভোটের ফলের বিশেষ সম্পর্ক নেই বা ভিড় দেখে ভোটের হিসাব মেলানো যায় না। কারণ, সাধারণভাবে বামজোট বিজেপির থেকে ভোট কম পেলেও ভিড়ের নিরিখে তাদের ব্রিগেডের ভিড় তুলমূলক বেশি হয়েছিল বলেই অনেকের মনে হয়েছে।
মোদির ভাষণশৈলী অবশ্যই জনমনোরঞ্জনকারী। নিঃসন্দেহে তিনি একজন সুবক্তা। তাঁর বাকচাতুর্যপূর্ন ভাষণের ভক্ত অনেকেই, বিশেষত বিজেপি কর্মী সমর্থকরা তো বটেই। তাঁর ভাষণে অত্যন্ত কার্যকরী কৌশল হচ্ছে ‘অফেন্স ইজ দা বেস্ট ডিফেন্স’। ‘খেলা হবে’ – শব্দবন্ধটি নিয়েও সুকৌশলে মমতার বিরুদ্ধে ব্যবহারেও যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখালেন। তবে তাঁর ভাষণে সেরা মন্তব্য করেছেন মমতার স্কুটি চালনা ও নন্দীগ্রামে দাঁড়ানো নিয়ে। তিনি যা বললেন, তার সারমর্ম হচ্ছে, দিদি স্কুটি চালাতে গিয়ে পড়ে চোট পাননি, ভালো, কিন্তু দিদি আপনি এটা কি করলেন, বাড়ি না গিয়ে স্কুটি নিয়ে নন্দীগ্রাম চলে গেলেন, কী আর করা যাবে, কেউ যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে পড়ে চোট পেতে চায়! এই ভাষ্যের মধ্য দিয়ে সুকৌশলে কয়েকটি বাক্যে অনেক কিছুই ইঙ্গিত করলেন।
তবে এই ব্রিগেডের সভার উল্লেখযোগ্য ঘটনা হোল বাঙালির আরেক জনপ্রিয় তারকা মিঠুনের যোগদান ও এক ছোবলেই ছবি হবার ডায়লগরুপী ভোকাল টনিক প্রদান এবং সিএম প্রার্থী হবার প্রত্যাশা জাগিয়ে রাখা।
আর একটি বিষয়ের উল্লেখ্য এবং সেটি হোল, ওই সভা উপলক্ষ্যে সিপিএমের পক্ষে মহম্মদ সেলিমের ‘বকোয়াস’। তিনি মোদিজির বক্তব্যের একটি বিষয়ের উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়া দিলেন। মোদিজি বলেছিলেন, “দিদি, আপকা রিমোট কন্ট্রোল তো অভি ঔর কিসিকো পাস হ্যায়”। তিনি নিশ্চিতভাবেই ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছিলেন, রিমোট এখন অভিষেকের হাতে। কিন্তু সেলিম তাঁর দলের আজগুবি তত্ত্বের কারণে ব্যাখ্যা করলেন যে, মোদি স্বীকার করলেন, মমতার রিমোট কন্ট্রোল আসলে রয়েছে নাগপুর আরএসএসের কাছে। সেলিমদের এই বোধটুকুও নেই যে, পাবলিক এসব খায়না, সেটা বুঝবেন। আসলে বিজেপির পথকে সুগম করার অপরাধকে আড়াল করতেই এসব আজগুবি বুলি তাঁদের আওড়াতেই হয় বারবার, বারংবার।
কল্যাণ সেনগুপ্ত
