রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে ‘ছেড়ে দেওয়ার’ জন্য আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের আন্ডার সেক্রেটারি অংশুমান মিশ্রের লেখা এই চিঠি নবান্নে পৌঁছতেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য প্রশাসনে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৮৭ ব্যাচের IAS অফিসার আলাপনের জন্য ক্যাবিনেটের অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিটি প্লেসমেন্ট অনুমোদন করেছে। তাই অবিলম্বে ওই অফিসারকে রাজ্য থেকে ‘ছেড়ে দেওয়ার’ আবেদন করা হচ্ছে। আগামী সোমবার, তাঁকে নয়াদিল্লির নর্থব্লকে ডিওপিটি বিভাগে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। চিঠিতে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (ক্যাডার) রুলস, ১৯৫৪ অনুযায়ী এই নির্দেশিকা জারি করা হলো।
স্বাভাবিকভাবেই, কেন্দ্রের এমন ‘একতরফা’ নির্দেশে ক্ষুব্ধ নবান্নের কর্তারা। ৩১ মে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের পদ থেকে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা থাকলেও, কিছু দিন আগেই তাঁর মেয়াদ তিন মাসের জন্য বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই আবেদনের ভিত্তিতে অনুমোদনও দেয় কেন্দ্র। তা ছাড়া, রাজ্যের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি এবং ইয়াসের দুর্যোগ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যসচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন আলাপন। এই অবস্থায় হঠাৎ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে পাঠানোর চিঠিতে ‘রাজনীতি’র রং দেখছেন রাজ্য প্রশাসনের অনেক শীর্ষকর্তাই।
কেন্দ্রের রাতারাতি এই বদলির নির্দেশের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পরে কখনও এমনটা হয়েছে? মোদী-শাহর বিজেপি আর কত নীচে নামবে? এ সবই করা হচ্ছে কারণ, বাংলার মানুষ ওই দু’জনকে না-বেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপুল ভোটে জিতিয়ে এনেছেন।’ অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিসচিব জহর সরকারও বলছেন, ‘আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর এই নির্দেশ বেআইনি। কোনও ক্যাডার অফিসারকে ডেপুটেশনে নিতে হলে তাঁর ও রাজ্য সরকারের মতামত ও অন্যান্য ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। উনি একটি রাজ্যের মুখ্যসচিব। কোনও আইনি পথে না-হেঁটে স্রেফ গুন্ডাগিরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।’
নিবিড় ডেস্ক
